ক্লেমস তথ্য ভান্ডারের মাধ্যমে, ভারতবর্ষের কর্মসংস্থান ( Employment of India) এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত পরিসংখ্যানগুলি বিশ্লেষণ করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভারতবর্ষে প্রায় ৪ কোটি ৭০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। গতবার অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে কর্মসংস্থানের হার ছিল ৩.২%। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে গত অর্থবর্ষের তুলনায় এই অর্থবর্ষে কর্মসংস্থানের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশ। Jobs Report by RBI in last Financial Year
ক্লেমস তথ্য ভান্ডারে যে তথ্যগুলি জমা পড়েছে সেই তথ্যগুলিকে খতিয়ে দেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ২৭ টি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের হার খতিয়ে দেখা হয়েছে। এই ২৭ টি ক্ষেত্রের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে কৃষি, মৎস্য, খনি এবং শিল্পোৎপাদনের মত ক্ষেত্রগুলি।
রিজার্ভ ব্যাংকের এই তথ্য প্রকাশের আগে বেসরকারি সংস্থা সিটি গ্রুপ ইন্ডিয়া ( City Group India Pvt limited) একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। ভারতবর্ষের কর্মসংস্থানের হার নিয়ে ওই বেসরকারি সংস্থার তৈরি করা রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে ভারতবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ হলেও কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় কর্মসংস্থান নেই। এর পাশাপাশি রিপোর্টে আরো বলা হয় যে বর্তমানকালে এই আর্থিক বৃদ্ধির হার বজায় থাকলে বছরে অন্তত ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হওয়া উচিত। কিন্তু ভারতবর্ষে যেভাবে বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটাকে কমানোর জন্য আগামী ১ দশকে প্রতিবছর ১.২ কোটি কর্মসংস্থান তৈরি হওয়া উচিত। তবে গত সোমবার কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক এই রিপোর্টটি খারিজ করেছে।4.7 crore jobs report by RBI in last financial year
সোমবার কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের তরফ থেকে জানিয়েছে যে পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভে এবং রিজার্ভ ব্যাংকের ক্লেমস তথ্য ভান্ডারে জমা পরা তথ্য থেকে জানা গেছে যে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ভারতবর্ষে নতুন করে ৮ কোটি চাকরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ সুপর্ণ মৈত্র জানিয়েছেন “রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানকে অস্বীকার করা যায় না। নিশ্চয়ই দেশে কর্মসংস্থানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে বেকারত্বের হার শুধু ভারতকে নয়, গোটা বিশ্বকেই চিন্তায় রেখেছে। প্রত্যেকটি দেশের প্রকৃতি, চরিত্র আলাদা। জনসংখ্যার দিক থেকে কাছাকাছি হওয়ার সুবাদে আমরা যদি চিনের সঙ্গে তুলনা করে দেখি, তবে ভারতে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে কর্মসংস্থানের হার অনেকটাই বেশি।”
এর পাশাপাশি অধ্যাপক মৈত্র আরও বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গোটা বিশ্বেই সরকারি চাকরিতে কোপ বসাচ্ছে। এ দেশেও গিগ ওয়ার্ক বা অস্থায়ী কাজে উৎসাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে যুব সম্প্রদায়ের। কেন্দ্রের সরকারও এখন বিষয়টিতে নজর দিচ্ছে।” কর্মসংস্থানের হার যে বৃদ্ধি পেয়েছে, সে কথা অস্বীকার করেননি অর্থনীতিবিদ অচিন চক্রবর্তীও। তাঁর কথায়, “পিরিয়োডিক লেবার ফোর্স সার্ভে একটি সর্বজনমান্য সমীক্ষা। সেই সমীক্ষাতেও বলা হয়েছে দেশে কর্মসংস্থানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ কর্মসংস্থানই হয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রে। খুবই খারাপ পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন দেশের শ্রমজীবী মানুষের একাংশ।” অধ্যাপক মহাশয়ের আরো সংযোজন হল, “কেন্দ্র প্রভিডেন্ট ফান্ডে নাম নথিভুক্তিকরণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকে কর্মসংস্থানের হার বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসাবে প্রচার করছে। কিন্তু তা থেকে কর্মসংস্থানের প্রকৃত চিত্রটা বোঝা সম্ভব নয়।”
Written by Nupur Chattopadhyay
WhatsApp Channel | Join Now |
Telegram Channel | Join Now |
This website uses cookies.